বাড়িCOVID-19আমাদের আইসিইউতে কোভিড-১৯ রোগীদের প্রাণ বাঁচানো: আমাদের অভিজ্ঞতা

আমাদের আইসিইউতে কোভিড-১৯ রোগীদের প্রাণ বাঁচানো: আমাদের অভিজ্ঞতা

ভূমিকা:

 আমাদের কোভিড ইউনিটে গুরুতর অসুস্থ কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসা করার ক্ষেত্রে আমাদের অভিজ্ঞতার কথা আমরা ভাগ করে নিতে চাই।  সম্পূর্ণ পরিকাঠামো এবং সংক্রমণ প্রতিরোধে বিশ্বমানের ব্যবস্থা সহযোগে অ্যাপোলো হাসপাতাল হায়দ্রাবাদের প্রথম কর্পোরেট হসপিটাল, যারা কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসার কাজে এগিয়ে এসেছিল। ম্যানেজমেন্ট টিম ভীষণই সক্রিয় ছিল এবং তারা সমস্ত প্রয়োজনীয় উপাদান দিয়েছেন এবং লজিস্টিকগত সহায়তা করেছেন। আমরা একটা প্রাথমিক পরিকল্পনা আর নীতি দিয়ে শুরু করেছিলাম। আমাদের যাত্রাপথের প্রাথমিক দিনগুলি নিঃসন্দেহে শক্ত ছিল, কিন্তু সময়ের সাথে সাথে আমরা ইতিবাচক অর্থেই সামনের দিকে এগিয়ে গেছি যেহেতু ততদিনে কোভিড-১৯ এর খবর বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে গেছে। 

একটি পৃথক কোভিড-১৯ ইউনিট নির্মাণ

কোভিড-১৯ এর রোগীদের চিকিৎসা করার ক্ষেত্রে আমাদের অভিজ্ঞতা শুরু হয়েছিল ২০২০ সালের মার্চ মাসে। সেই সময়ে আমরা আমাদের পুনর্বাসন কেন্দ্রটিকে সম্পূর্ণভাবে একটি কোভিড-১৯ ইউনিটে পরিণত করেছিলাম। এটা মূল হাসপাতাল থেকে ২৫০ মিটার দূরে অবস্থিত। পৃথক ভবন হবার কারণে হাসপাতালের অভ্যন্তরে সংক্রমণ কমানোর ঝুঁকি কমানো সম্ভব হয়েছিল। যে সব রোগী কোভিড-১৯ এর সন্দেহজনক উপসর্গ যেমন জ্বর, ঠাণ্ডাকাশি ইত্যাদি নিয়ে মূল হাসপাতালে আসত (এখনো এসে চলেছে) তাদের আমাদের প্রোটোকল অনুযায়ী পৃথক করে জ্বরের ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়া হত। এটা কোভিড-১৯ ইউনিটের একতলায় অবস্থিত। আমরা এখনো রাজ্য সরকার ও কেন্দ্র সরকারের নির্দেশাবলী অনুযায়ী প্রত্যেক কোভিড-১৯ এর রোগীর তথ্য লিপিবদ্ধ করে চলেছি।  

জ্বরের ক্লিনিকে সংক্রামক রোগ বিশারদরা বিভিন্ন কেসগুলি পর্যালোচনা করেন এবং সেই মত তাদের ওয়ার্ডে পাঠাবেন অথবা তাদের শারীরিক অবস্থার উপর নির্ভর করে বাড়িতে পাঠানো হয়। কোভিড-১৯ ইউনিটের দোতলায় অল্প উপসর্গ যুক্ত করোনাভাইরাস আক্রান্ত পজেটিভ রোগীদের  রাখা হয়েছিল। এদের খুবই অল্প পরিমাণে অক্সিজেনের দরকার। এই ভবনের তিনতলাটি সম্পূর্ণভাবে কোভিড-১৯ এর আইসিইউ হিসাবে ব্যবহার করা হতো, যেখানে মাঝামাঝি এবং ভয়ানক উপসর্গযুক্ত রোগীদের রাখা হতো, যারা প্রচণ্ড অসুস্থ এবং চিকিৎসার জন্য যান্ত্রিক ভেন্টিলেশনের প্রয়োজন হতে পারে। 

কোভিড ইউনিট

Covid-19 UnitCovid-১৯ Unit

কোভিড-১৯ – প্রাথমিক পরীক্ষা এবং ব্যবস্থাপনা

রোগীদের প্রতিটি প্রবেশপথে কোভিড-১৯ এর প্রাথমিক পরীক্ষার ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল। আপৎকালীন বিভাগে যে সব রোগীরা অসুস্থ এবং যাদের কোভিড-১৯ হতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে, তাদের একটি নির্দিষ্ট এলাকায় যত্ন নেওয়া হবে এবং তারপর যদি তাদের পরীক্ষা পজেটিভ হয়, তারপর তাদের কোভিড-১৯ এর আইসিইউতে পাঠানো হবে। যদি তাদের কোন রোগে কোভিড-১৯ এর পরীক্ষার ফলাফল নেগেটিভ হয়, তবে তাদের আবার মূল হাসপাতালে ফেরত আনা হয়। যদি কোনো রোগীর কোভিড-১৯ এর ফলাফল নেতিবাচক আসে, কিন্তু তাদের শরীরে এখনো উপসর্গ আছে বলে মনে হয়, তবে তাদের কোভিড-১৯ এর দ্বিতীয় পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। এইভাবে প্রটোকলগুলিকে দৃঢ় ভাবে মান্যতা দিয়ে মার্চের শুরু থেকে আজ পর্যন্ত কাজ করা হচ্ছে। যে মুহুর্তে নতুন কোন তথ্য আসছে, সেই অনুযায়ী এই প্রটোকলগুলিকে আপডেট করা হচ্ছে। 

পরীক্ষা পূর্ববর্তী প্রবেশপথ

পরীক্ষাক্ষেত্র

লোকবল – সংহতকরণ এবং প্রশিক্ষণ

কোভিড-১৯ ইউনিটের যত্ন নেওয়ার জন্য একটি নির্দিষ্ট দল গঠন করা হয়েছিল। ক্রিটিক্যাল কেয়ার দলের নেতৃত্বের অধীনে চিকিৎসা এবং সহায়ক কর্মীবৃন্দ ছিল। কোয়ারেন্টেইনের সুবিধে সমেত ভিন্ন কাজের তালিকা বানানো হয়েছিল। কিছু সময় বাদে বাদে কাউন্সেলিং, উপসর্গগুলির উপর নযর রাখা এবং প্রতিরোধমূলক ওষুধের ব্যবস্থা করতেন স্বতন্ত্র স্টেকহোল্ডাররা। সমস্ত স্বাস্থ্যকর্মীরা তাদের দায়িত্ব সম্পর্কে স্পষ্টভাবে অবগত ছিলেন এবং তাদের কোভিড পজেটিভ রোগীদের যত্ন নেবার সময় যথাযথ সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা (যেমন পিপিই পরা এবং খোলা) নেওয়ার ব্যাপারে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। কোভিড-১৯ এর আইসিইউতে নিজেদের কর্তব্য পালনকালে কর্মীদের যথেষ্ট বিশ্রাম দেওয়া হত। আমাদের হাসপাতালে অতিরিক্ত কর্মীর ব্যাপারে পরিকল্পনা করা হয়েছিল এবং হাসপাতালে অতিরিক্ত কর্মীর ব্যবস্থাও করা হয়েছিল। কারণ অনেক কর্মীরই এই রোগটিতে সংক্রামিত হয়ে যাবার উচ্চ সম্ভাবনা ছিল। 

রোগীরা এবং তাদের পরিবারের জন্য ভালোবাসা ও যত্নের উষ্ণ ছোঁয়া

অ্যাপোলোতে আমরা সহমর্মিতা সহকারে যত্ন নেওয়ায় বিশ্বাস করি। কোভিড-১৯ এর ব্যাপারে সোশ্যাল মিডিয়ায় অতি সচেতনতার কারণে রোগীরা এবং তাদের পরিবারের মধ্যে ব্যাপক চিন্তা ও অবাঞ্ছিত ভয় উৎপন্ন হয়েছিল। রোগীদের বর্তমান অবস্থার ব্যাপারে তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স করা হত এবং তারা রোগীর সঙ্গে কথাও বলতে পারতেন। কোভিড-১৯ এর মৃত্যুভয় থেকে রোগী ও রোগীর পরিবারকে প্যানিক অ্যাটাক থেকে বাঁচাতে মনোরোগ বিশেষজ্ঞ, মনোবিজ্ঞানী, চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত সামজিক কর্মী এবং আধ্যাত্মিক গুরুদের সাহায্য নেওয়া হত। 

ই-আইসিইউ এর ভূমিকা

নিয়মিত যত্ন এবং খেয়াল রাখার পাশাপাশি ডিপার্টমেন্ট অফ ক্রিটিক্যাল কেয়ার মেডিসিনের রিমোট ইন্টেন্সিভ কেয়ার ডিভিসনের মাধ্যমে সব রোগীর উপর নজর রাখা হত। ১০০ এর বেশি বেডে ক্যামেরা লাগানো ছিল। এই সব ক্যামেরাগুলির মাধ্যমে দিবারাত্র যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ সংকেতের প্রতি নজর রাখা হত। 

 কোভিড-১৯ এর চিকিৎসার চল (লকডাউন পূর্ববর্তী সময় থেকে বর্তমান পর্যন্ত)

শুরুর দিকে, ওয়ার্ডের যেসব রোগীদের অল্প রোগ আছে, তাদের ভিটামিন সি ও জিঙ্ক সাপ্লিমেন্ট দিয়ে নজরে রাখা হত। যারা ভয়াবহ বা মাঝামাঝি অসুস্থ হয়ে আইসিইউতে থাকতেন, তাদের কাউকে কাউকে অ্যান্টিকোয়াগুল্যান্ট, হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন (এইচসিকিউ) দেওয়া হয় এবং কিছু নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে স্টেরয়েড দেওয়া হয়।  পঞ্চাশোর্ধ রোগীদের ক্ষেত্রে যাতে কৃমির উপদ্রব না হয়, তার জন্য ইভার্মেক্টিন ব্যবহার করা হচ্ছে। এটি কোভিড-১৯ এর একটি নির্দিষ্ট থেরাপি নয়। মূল চিকিৎসায় অতিরিক্ত হিসেবে এবং নিউমোনিয়ার অন্যান্য ধরণগুলির চিকিৎসা করার জন্য ডক্সিসাইক্লিনও ব্যবহার করা হয়েছিল। রোগের তীব্রতার উপর নির্ভর করে পুনরুদ্ধারের সময়ে ২-৪ সপ্তাহের জন্য রোগীদের কম মাত্রায় মৌখিক স্টেরয়েড এবং মৌখিক অ্যান্টিকোয়াগুলেন্ট দেওয়া হত। সেসব রোগীদের তঞ্চন হয়েছে, তাদের জন্য তিন মাসের অ্যান্টিকোয়াগুলেশনের সুপারিশ করা হয়। যেসব রোগীদের অক্সিজেনের সাহায্য দরকার, তাদের নাসারন্ধ্র, মুখের মাস্ক অথবা প্রয়োজন অনুসারে  উচ্চ ঘনত্ব যুক্ত মাস্ক দেওয়া হত। যাদের অক্সিজেনেশনের পদ্ধতির উন্নতি হত না, তাদের উচ্চ কম্পাঙ্ক যুক্ত ন্যাসাল ক্যানুলা (এইচএফএনসি) বা নন-ইনভেসিভ ভেটিলেশনের (এনআইভি) মাধ্যমে চিকিৎসা করা হত। আমাদের অভিজ্ঞতা বলে যে, যাদের হাইপোক্সেমিক রেসপিরেটরি ফেইলিওর হয়, তাদের এইচএফএনসি এর অক্সিজেনেশনে উন্নতি হতে পারে কিন্তু শ্বাসের কাজ কমবে না। কিন্তু যেসব রোগীরা এনআইভি ভেন্টিলেশনে আছে, তারা অনেক বেশি স্বাচ্ছন্দ্যে আছে। তাদের অক্সিজেনেশন মোটামুটি ঠিকঠক এবং ইনটিউবেশন এবং যান্ত্রিক ভেন্টিলেশনের কম প্রয়োজন পড়ছে। যেসব রোগীদের এইচএফএনসি অথবা এনআইভিতে থাকলেও ও যাদের এবিজি ক্রমাগত কমছে, যাদের অক্সিজেনের সম্পৃক্ততা ৯০% এরও ছিল, তাদের কাউকে কাউকে ইনটুবেট করা হত এবং ভেন্টিলেটরে দেওয়া হত। 

আইসিউতে রোগীদের প্রদাহসৃষ্টিকারী চিহ্নিতকারী ও পরীক্ষাগার আছে যেখানে সম্পূর্ণ রক্তের ছবি, সিআরপি, এইচএস-ট্রোপোনিন I, এলডিএইচ, ডি-ডিমার, পায়ুর কার্যকারিতার প্যানেল, যকৃতের কার্যকারিতার পরীক্ষা, আইএল-৬ এবং ফারিটিন আছে। হাসপাতালের অধিকাংশ কোভিড-১৯ পজেটিভ রোগীরা, যাদের উপসর্গ আছে, তাদের রোগের ভয়াবহতা পরিমাপের জন্য বুকের সিটি স্ক্যান করা হয়েছে (কো-র‍্যাড স্কোর এবং সিটি সিভিয়ারিটি ইন্ডেক্সের মাধ্যমে)।

কিছু মাস ধরে সমস্ত ঔষধগুলি উপলব্ধ হয়েছে এবং বর্তমানে মাঝামাঝি থেকে গুরুতর অসুস্থ রোগীদের আরইডি থেরাপি দেওয়া হচ্ছে, যার মধ্যে রয়েছে রেমডেসিভির, এনোক্সাপ্যারিন সোডিয়াম এবং ডেক্সামিথাসন অথবা মিথাইলপ্রেডনিসোলন। যারা এই থেরাপিতে সাড়া দিচ্ছেন না, তাদের টোসিলিজুমাব বা একক বা যথোপযুক্ত ইঙ্গিত এবং অবগত করে পাওয়া অনুমতির পরে নিরাময়কারী প্লাজমা থেরাপি দেওয়া হয়। 

আমাদের অভিজ্ঞতায়, যেসব রোগীরা কিছু বিপদসংকুল সংকেত যেমন অল্প শ্বাসকষ্ট অথবা ৯৪% বা এর কম পরিমাণ অক্সিজেন স্যাচুরেশন নিয়ে আসে, তারা সাধারণত সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে যেতে পারে। যে সমস্ত রোগীদের একাধিক শারীরিক রোগ রয়েছে, বৃদ্ধ বয়স, দুর্বল অনাক্রম্যতা আছে অথবা যাদের যান্ত্রিক ভেন্টিলেশন প্রয়োজন, তাদের বেঁচে ওঠার সম্ভাবনা কিছুটা কম। এটি বিশ্বজনীন ভাবে লক্ষ্য করা গেছে। 

লকডাউন-পূর্ববর্তী সময়ের থেকে ভিন্নভাবে বর্তমানে সমস্ত চিকিৎসার বিকল্পগুলি সুশৃঙ্খলভাবে বিন্যস্ত করা হয়েছে। কিছু মানুষের অবস্থা ভালোও হয় না, খারাপও হয় না, কিন্তু তারা এইচএফএনসি অথবা এনআইভিতে তারা সপ্তাহজুড়ে আটকে থাকেন, তাদের ফলাফল খুবই নিম্নমানের হয়। জাগ্রত প্রোনিং করতে রোগীদের অক্সিজেনেশনের উন্নতি হয় এবং আইসিইউ থেকে তারা দ্রুত মুক্তি পান।  কিন্তু যে রোগীরা ভেন্টিলেটরে আছেbut patients who are on ventilator there may be an improvement in oxygenation but unclear mortality reduction তাদের অক্সিজেনেশন উন্নততর হতে পারে কিন্তু মৃত্যুহারের হ্রাস সংক্রান্ত বিষয়ে কোনো নিশ্চয়তা নেই। 

কোভিড-১৯ পরবর্তী ঘটনাবলী

যেসব রোগীরা রোগটি থেকে সেরে উঠেছেন এবং যাদের হাসপাতাল থেকে ছুটি দেয়া হয়েছে তাদেরও পুনরুদ্ধার পর্বে (কোভিড-১৯ পরবর্তী ঘটনাবলী) এক থেকে দুই মাসের জন্য কিছু দুর্বলতা, ক্লান্তি এবং কিছুটা শ্বাসকষ্ট থাকতে পারে।  দেখা গেছে যে বুকের পুনরাবৃত্তি করা সিটিস্ক্যানের ফুসফুসের ফাইব্রোসিস ধরা পড়েছে।  চিকিৎসা চলাকালীন এবং পুনরুদ্ধার চলাকালীন, কোভিড-১৯ রোগীদের ঘনঘন মায়োকার্ডিটিস, পেরিকার্ডিয়াল ইফিউশন হতে পারে। এআরডিএস বা থ্রম্বোটিক জটিলতার কারণে সাধারণত অধিকাংশ রোগীর মৃত্যু ঘটে। 

একবার কোভিড-১৯ এর রোগী সেরে উঠলেই কি সারাজীবনের মত এটা শেষ হয়ে যায়?

কিছু কিছু রোগী যারা সেরে উঠেছে এবং খুশি খুশি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন তারা আবার উপসর্গগুলি ফিরে আসতে ভর্তি হয়েছেন এর মধ্যে কিছু কারণ ছিল গৌণ সাইটোকাইন স্টর্ম। উদাহরণস্বরূপ, যে রোগীদের ছাড়া পাবার সময় আইএল-৬ স্তর ছিল ৮৫ পিজি/ডিএল, তারা ৭দিন পরে আবার উপসর্গগ্রস্ত হয়ে পড়ছেন এবংআইএল-৬-এ ২৫৭০ পিজি/ডিএল নিয়ে ভর্তি হচ্ছেন। প্রথম বার ভর্তির ক্ষেত্রে তাদের আরইডি থেরাপি দেওয়া হয়েছিল। দ্বিতীয় বার ভর্তির সময় তার এনআইভি, টোসিলিজুমাব, নিরাময়কারী প্লাজমা থেরাপির দরকার পড়ে এবং তারপর তিনি সুস্থ হন। যদিও IL-6 স্তরগুলি সর্বদা ARDS-এর মাত্রার সাথে সম্পর্কযুক্ত নয় বলে ধারণা করা হয়- তবু প্রতিটি রোগীর ঝুঁকি এবং সুবিধাগুলির পৃথক মূল্যায়ন প্রয়োজন।

কোভিড-১৯ রোগগ্রস্ত গর্ভবতী মহিলার চিকিৎসার অভিনব ও চ্যালেঞ্জিং অভিজ্ঞতা

একজন গর্ভবতী মহিলা যিনি কোভিড-১৯ রোগগ্রস্ত, তাঁকে অতি সত্বর আপৎকালীন বিভাগে ভর্তি করা হল। তার অবস্থা গুরুতর হয়ে যায় এবং তাকে ভেন্টিলেটরে দেওয়া হয়। তার তৎক্ষণাৎ সিজারির সার্জারির দরকার ছিল। সার্জারির পরে সদ্যোজাত শিশুটির কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়। কিন্তু সৌভাগ্যবশত ব্যাপক দলগত প্রচেষ্টার কারণে তাকে বাঁচানো গিয়েছিল। মাকে আইসিইউতে ভেন্টিলেটরে দেওয়া হল। আরইডি থেরাপি সহ যান্ত্রিক ভেন্টিলেশন, টোসিলিজুমাব এবং নিরাময়কারী প্লাজমা থেরাপি দেওয়ার পরে তিনি ভেন্টিলেটর থেকে মুক্তি পান, সেরে ওঠেন এবং ছাড়া পান। ছাড়ার সময় মা ও বাচ্চা দুজনেই ভালো ছিল। 

ইসিএমও/ইসিসিও২আর – গেম চেঞ্জার

আমাদের অভিজ্ঞতায় যথাযথ মেডিক্যাল এবং ভেন্টিলেটরের সাহায্য সত্ত্বেও ৮-১০% রোগীর স্বাস্থ্যের অবনতি হয়েছিল। এরকম রোগীর জন্য আমরা এক্সট্রাকরপোরিয়াল থেরাপির ব্যবহার করেছিলাম। ইসিএমও (এক্সট্রাকরপোরিয়াল মেমব্রেন অক্সিজেনেশন) আমাদের মূল হাতিয়ার। যে রোগী ইসিএমও-র জন্য উপযুক্ত নন, তাদের উদ্ধারের জন্য আমরা ইসিসিও২আর পদ্ধতিকে নির্বাচিত করেছি। আমাদের অভিজ্ঞতাটি ভীষণ উৎসাহবর্ধক ছিল কারণ এটি সহজতর, বেশি সস্তা ও কম আক্রমণাত্মক ছিল। 

প্রতিভার জন্য একটা খেলায় জয়লাভ করা যায়, কিন্তু দলগত প্রচেষ্টায় চ্যাম্পিয়নশিপ জেতা যায়!

দল হিসেবে ক্রিটিক্যাল কেয়ার মেডিসিন বিভাগ হাসপাতালের একটি অবিচ্ছেদ্য এবং অপরিহার্য অঙ্গ। আমাদের অনেক বিশেষজ্ঞ এবং স্পেশালিস্টরা কোভিড-১৯ এর রোগীদের সুষ্ঠু ভাবে ব্যবস্থাপনা করার জন্য অগণিত ঘন্টার পর ঘন্টা কাজ করে চলেছেন। তাঁদের মধ্যে অনেকেই সংক্রামিত হয়েছেন। কিন্তু তাঁরা সুস্থ হবার পরেই আবার কাজে ফিরে এসেছেন।  করোনাভাইরাসের মহামারির সংকটকাল এবং এর চিকিৎসার জন্য চ্যালেঞ্জগুলি আমাদের দেখিয়ে দিয়েছে যে আমাদের মত স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত মানুষদের সহমর্মিতা, সমবেদনা এবং ব্যতিক্রমী প্রমাণ-ভিত্তিক যত্নের প্রতি আরো মনোযোগ দেওয়া উচিৎ। আমরা এই অসাধারণ গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত হতে পেরে গর্ববোধ করি।

Avatar
Verified By Apollo Pulmonologist
The content is verified and reviewd by experienced practicing Pulmonologist to ensure that the information provided is current, accurate and above all, patient-focused
Quick Appointment
Most Popular

কলপোস্কোপির সাথে সম্পর্কিত ঝুঁকি এবং পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াগুলি কী কী?

ইরেক্টাইল ডিসফাংশন রিং কি পৌরুষত্বহীনতার চিকিৎসা করতে পারে?

হাঁটুতে ব্যথা হলে হাঁটার জুতো বাছাই করার সময় চারটি দিক মনে রাখা উচিত

ল্যাকটোজের প্রতি অসহিষ্ণুতার লক্ষণসমূহ যেগুলি আপনার বিবেচনা করা উচিত

Quick Book

Request A Call Back

X