ভারতবর্ষে এখন কোভিড-19 অতিমারীর দ্বিতীয় ঢেউ। ফলে এখন প্রতিদিন আক্রান্তের সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে। সারা ভারতবর্ষে কোভিড-19-এ আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় মানুষজন নিজের যত্ন কীভাবে নেওয়া যায় সেই চেষ্টা করছে। কোভিড-19-এর জন্য মানুষের চিকিৎসা ব্যবস্থাও ব্যাহত হচ্ছে।
সারা পৃথিবীর বিজ্ঞানীরা কোভিড-19 এর চিকিৎসা পদ্ধতি কীভাবে উন্নত করা যায় তার ওপর কাজ করছেন। অপটিমাল সাপোর্টিভ কেয়ার প্লাজমা থেরাপি সহ বিভিন্ন অ্যান্টিভাইরাল ড্রাগস দিচ্ছে।
অন্যান্য সাপোর্টিভ কেয়ার গুরুতর অসুস্থ রোগীদের অক্সিজেন এবং শ্বাসকষ্ট জনিত রোগের চিকিৎসা সরবরাহ করছে।
কোভিড-19-এর চিকিৎসা পদ্ধতি
কোভিড-19-এ আক্রান্ত হসপিটালে ভর্তি রোগীদের ক্ষেত্রে ডাক্তাররা যে সমস্ত ওষুধ ব্যবহার করেন সেগুলি হল:
মনে রাখবেন, কোভিড-19 এর চিকিৎসার জন্য আমরা কোনো প্রকার ড্রাগ, অ্যান্টিবায়োটিক নিতে বলছি না, সর্বদা ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করবেন।
রেমডিসিভির
2020 সালের অক্টোবর মাসে করোনাভাইরাস এর চিকিৎসার জন্য এফডিএ রেমডিসিভির এর অনুমোদন দেয়, এটি একটি অ্যান্টিভাইরাল ড্রাগ। এটিকে অনুমোদন দেওয়া হয় যখন হসপিটালে ভর্তি কিছু রোগীর ওপর এই ওষুধ প্রয়োগ করার ফলে দেখা যায় যে তারা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠছে।
হসপিটালে ভর্তি রোগীর জরুরি চিকিৎসার জন্য ভারতবর্ষে ডিসিজিআই রেমডিসিভির ব্যবহারের অনুমোদন দেয়। হসপিটালে ভর্তি 12 বছরের ঊর্ধ্বে যেসব শিশুদের ওজন কমপক্ষে 40 কেজি এবং প্রাপ্ত বয়স্কদের এই ড্রাগ দেওয়া যাবে।
ডেক্সামেথাসন
অতিমারী শুরু হওয়া থেকে ডাক্তাররা কর্টিকোস্টেরয়েড ব্যবহার করছেন কোভিড-19-এ আক্রান্ত গুরুতর অসুস্থ রোগীর চিকিৎসার জন্য। সাইটোকাইনিন স্টর্ম আছে যাদের তাদের জন্য এই ড্রাগটি খুবই কার্যকরী (হাইপার ইমিউন রিঅ্যাকশন)।
এই ক্ষেত্রে হাইপার অ্যাক্টিভ ইমিউন সিস্টেম রোগীর শ্বাসযন্ত্র এবংঅন্যান্য অঙ্গের ক্ষতি করে, কখনো কখনো এর ফলে জীবন নিয়ে সংশয়ের সম্ভাবনাও তৈরি হয়।
ডেক্সামেথাসন এবং কর্টিকোস্টেরয়েড বেশ কার্যকরী ওষুধ। এগুলি ন্যায্য দামে যে কোনো জায়গায় পাওয়া যায়।
রেমডিসিভিরের সাথে ব্যারিসিটিনিব
একটি ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল অনুযায়ী, ব্যারিসিটিনিব এবং রেমডিসিভির একসাথে কোভিড-19-এর চিকিৎসার জন্য বেশ কার্যকরী। ব্যারিসিটিনিব একটি অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ওষুধ। এটিকে রেমডিসিভিরের সাথে হসপিটালে ভর্তি রোগীদের ওপর ব্যবহার করা হয়, ফলে রোগীরা দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠে। যেহেতু এই দুটি ওষুধের কার্যকারিতা আছে তাই এর ওপর আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার প্রয়োজন।
অ্যান্টিকোগুলেশন ড্রাগস্ বা ব্লাড থিনার্স
কোভিড-19-এ আক্রান্ত হয়ে যে সমস্ত রোগীরা হসপিটালে ভর্তি হয় তাদের বেশিরভাগ জনকে রক্ত যাতে জমাট বেঁধে না যায় সেই ওষুধ দেওয়া হয়। সাম্প্রতিক কালের একটি গবেষণা অনুযায়ী, ব্লাড থিনার্স কোভিড-19-এ আক্রান্তদের প্রাণহানির ঝুঁকি কমায়।
মোনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি (এম এ বি) চিকিৎসা
আমাদের শরীরে স্বাভাবিক ভাবেই কিছু অ্যান্টিবডি তৈরি হয় যেগুলি বাইরে থেকে আসা ভাইরাস যেমন সার্স-কোভ-2 প্রভৃতির সাথে লড়াই করে। এটির ই-ল্যাবে তৈরি একটি ভ্যারিয়েন্ট হল মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি। মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি চিকিৎসা কোভিড-19-এ আক্রান্তদের গুরুতর অবস্থা হওয়া থেকে আটকায়।
কনভ্যালসেন্ট প্লাজমা থেরাপি
যে সমস্ত মানুষজন করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন তাদের রক্তে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে,এটি সুস্থ হয়ে উঠতে সাহায্য করেছে। কনভ্যালসেন্ট প্লাজমা থেরাপিতে সুস্থ হয়ে ওঠা মানুষের রক্ত (প্লাজমা) ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। এটি নিরাপদ এবং এর ব্যবহার ব্যাপকভাবে হচ্ছে।
উপসংহার
এগুলি হল সারা পৃথিবীতে কোভিড-19-এর চিকিৎসায় ব্যবহৃত কয়েকটি ওষুধ। বেশ কিছু গবেষণার পর বিজ্ঞানীরা কয়েকটি কার্যকরী ভ্যাকসিন খুঁজে পেয়েছেন। ইতিমধ্যে টিকাকরণ শুরু হয়ে গেছে। আপনিও টিকা নিয়ে নিন।